স্বদেশ ডেস্ক: সকল ধরনের কর্মক্ষেত্রে প্রায় অর্ধেক কর্মী মানসিক চাপ বৃদ্ধির কারণে ‘ব্রেকিং পয়েন্ট’ এ প৷ে মনোবিজ্ঞানে ‘ব্রেকিং পয়েন্ট’ হল মানসিক চারে সেই মুহুর্ত যেখানে কোনও ব্যক্তি ভেঙে পড়ে বা পরিস্থিতি সমালোচনামূলক হয়ে ওঠে৷
২০০০ পেশাদারের মধ্যে চালানো এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা প্রাপ্তবয়স্ক পরিশ্রমী তাদের কার্যদিবসের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় জোর বা চাপ অনুভব করে৷ তাদের কাজের মুখে বাধা হওয়া এই মানসিক চাপের একমাত্র কারণ হল-প্রতি সপ্তাহের পাঁচ ঘণ্টা ঘুম কম হওয়া৷ কাজের শেষ মূহুর্তে আরও ঘণ্টাখানেক ই-মেইল চেক, হাতের কাজটি শেষ করা, বক্তৃতা বা প্রেজেন্Uশেন প্রস্তুত করা, অফিসের বস কর্তৃক কর্মীর কাছে বেশি বেশি চাহিদা ইত্যাদি কর্মক্ষেত্রে চাপের সবচেয়ে বড় কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ আরও চাপ সৃষ্টির কারণ হল-সপ্তাহে কর্মচারিদের ৩১ মিনিটের কাজের জন্য মালিকদের আরও ২ ঘন্টা ৪৫ মিনিট অভিযোগ করা৷ দাতব্য সংস্থা সিএবিএ’র মুখপাত্র মােeিজ্ঞানী রিচার্ড জেনকিনস বলেছেন, প্রত্যেকেই চাপ অনুভব করে৷ তবে একটি মাত্রার চাপ এলে ভালো, এতে তারা ভালো কাজ করতে পারে৷ তবে অত্যাধিক চাপ নিয়ন্ত্রণহীন স্তরে বেড়ে গেলে কর্মীদের চাপ আরও বাড়ে৷ শ্রমজীবী মানুষকে ‘ব্রেকিং পয়েন্ট’ এড়া েকীভাবে তাদের পরিচালনা করতে হবে তা জানতে হবে৷
রিচার্ড জেনকিনস বলেন, প্রত্যেকের একটি কৌশল থাকবে যা তাদের চাপটি মুক্ত করতে সহায়তা করবে৷ এক্ষেত্রে জিমের মতো শারীরিক ক্রিয়াকলাপ অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মতো কিছু জিনিসও সহায়তা করতে পারে৷ দুর্ভাগ্যক্রমে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা আমাদের জীবনে এটিকে বিরক্তিকর মনে করি, অথচ তা চাপ মুক্ত করতে এবং চাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে৷ তাই আপনার চাপ কমানোর জন্য উপায়গুলি খুঁজে বের করা অপরিহার্য, তবে কেবলমাত্র লক্ষণগুলির চিকিত্সার পরিবর্তে আগে চাপের উত্সটি জানতে হবে৷
সমীক্ষায় ১০ জনের মধ্যে সাতজন প্রাপ্তবয়স্করা তাদের সহকর্মী, অংশীদার, পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছে৷ যদিও যারা কাজের চাপে অনুভূত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ এই বিষয়ে কিছু বলেনি৷ তারা চান সমস্যাটি নিজে থেকে দূর করবে৷ যারা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ তাদের পরিচালককে এ বিষয়ে বলেছিলেন, আর ৫১ শতাংশই মানসিক চাপ কমাতে সফরে বের হয়েছেন৷ সমীক্ষায় দেখা যায়, যখন চাপ খুব বেশি হয়ে যায়, তখন ৩১ শতাংশ মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়৷ আর ১৪ শতাংশ তাদের নিজেদের বাচ্চাদের অফিস ফাঁকির অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছেন৷ তবে তাদের মধ্যে যদি চাপের মাত্রা খুব বেশি হয়ে যায়, তবে ১০ বা ৬ জন তাদের কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে অভিযোগ করে বেরোনোর পরে ভাল বোধ করে৷
বৃটিশরা সপ্তাহে সম্ভবত সোমবার কর্মক্ষেত্রে বেশি আর বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন চাপের দিন হিসেবে দেখে৷ জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৫ জনের মধ্যে তিন জন বিরতিতে কী মিস করবেন তা ভেবে ছুটি কাটাতে যাওয়ার সময় চাপে পড়েন৷ সিএবিএ’র মুখপাত্র বনে, যদি কর্মক্ষেত্রের অত্যাধিক চাপ থাকে, যে চাপ এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আপনি কাজ করতে যেতে অক্ষম বোধ করেন, তবে এটি পরিবর্তন করার সময় এসেছে৷ প্রথমত, সবচেয়ে কঠিন পদক্ষেপটি হলো- কারও সঙ্গে এমন হলে, এ সম্পর্কে কথা বলতে হবে, হোক সে সহকর্মী, ব্যবস্থাপক বা পরিবারের কোনও সদস্য৷ কখনও কখনও সবকিছু মেনে নেয়াটা আপনার চাপ বাড়ানোর উত্স হতে পারে৷